Wellcome to National Portal
বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন
  • ১১ বৈশাখ, ১৪৩১
সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

পল্লী অঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করছে ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’


প্রকাশন তারিখ : 2017-02-28

বিভাগের ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার ৩৫২টি ইউনিয়নের পল্লী অঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক। বরিশাল, ঝালকাঠী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলার পিছিয়ে পড়া গ্রামীন জনগোষ্ঠীর শতভাগ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করছে ১ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের এখন আর অপ-চিকিৎসার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ দিতে হচ্ছেনা। তাই এই অঞ্চলের প্রায় ১ কোটি বাসিন্দার প্রাণ বাঁচাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিক।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিভাগের ৬টি জেলায় বর্তমানে ১ হাজার ৩১টি ক্লিনিক চালু রয়েছে। এর মধ্যে বরিশালে ২৭৫টি, ভোলায় ২১১টি, পটুয়াখালীতে ১৮৪টি, পিরোজপুরে ১৫৪টি, বরগুনায় ১২০টি ও ঝালকাঠীতে ৮৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। গত বছর (২০১৬) এখান থেকে ১৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪৮১জন পুরুষ, ৩৯ লাখ ৩০ হাজার ৮১৩ জন নারী ও ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৩০২জন শিশুসহ মোট ৬৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫৯৬ জনকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার করা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৪০৪ জন রোগীকে। এছাড়া বিভাগের জন্য আরো ১’শ ২৮টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে বলে সূত্র জানায়।
স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা: মাহবুবুর রহমান বাসস’কে বলেন, বর্তমান সরকার সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে ব্যাপক কাজ করছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবার কাছে সেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রধান ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম এই উদোগ এখানে ব্যাপক সফলতা অর্জন করছে। ক্লিনিকগুলোতে আন্তরিক পরিবেশে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সম্পূর্ণ সরকারিভাবে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত করছে বলে জানান তিনি।
বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের তবিরকাঠী গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের দ্বায়িত্বে থাকা নুপুর দত্ত বলেন, তার এখানে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে সাধারন রোগী সেবা, বাচ্চাদের শুন্য থেকে ৫বছর পর্যন্ত সেবা, গর্ভবতী মায়েদের ডেলিভারী সেবাসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা রয়েছে। ওষুধ দেওয়া হয় ৩০ প্রকারের। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এসব স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয়। আর রোগীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে অনত্র রেফার করার জন্য বলা হয়। পাশাপাশি সব ধরনের পরামর্শমুলক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া বলে নুপুর দত্ত জানান।
এখানে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন বোয়ালীয়া এলাকার রানি বেগম (৭০)। তার স্বামী নেই। বুকে ব্যাথা, সর্দী ও কাশিতে ভুগছেন দীর্ঘদিন। অবশেষে তবিরকাঠী কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে ভালো আছেন তিনি। মিনারা বেগম (৫৮) চোখে সমস্য ছিলো বহুদিন। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে তাকে। পরবর্তিতে ক্লিনিরে সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়েছে তাকে। শুধু রানী বেগম, মিনারা বেগম নয়, এমন অনেক অসহায় নারী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে সুস্থ আছেন।
চিকিৎসা সেবা নিতে ইমামকাঠী থেকে আসা নিতাই ঘোষ (৮৫) বলেন, গত কয়েক দিন যাবত হাঁপানি ও শ্বাস কষ্টে ভুগছেন। তার পক্ষে ১০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে এসেছেন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওষুধ-পত্র পেয়ে খুশি তিনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
দেশের একমাত্র দ্বীপ জেলা ভোলা। এখানকার ৭টি উপজেলায় বর্তমানে ২১১টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে। নদী বেষ্টিত এই জেলায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ এই উদ্যেগের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। গত বছর শুধুমাত্র ভোলাতেই ২২ লাখ ৮২ হাজার ১১৩ জনকে সরকারি স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ৪৫০ জন পুরুষ, ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৫২৪ জন মহিলা ও ১ লাখ ৭০ হাজার ১৯জন শিশু রয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত স¦াস্থ্য সেবা গ্রহণের মাধ্যমে ভালো আছেন প্রত্যন্ত চরাঞ্চল ও পল্লী এলাকার বাসিন্দারা।
ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিন দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া হাই স্কুল এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সামসুল আলম মাষ্টার (৭১) বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু হওয়ার ফলে ঝাড়-ফোক-তাবিজ-কবিরাজি ইত্যাদি অপচিকিৎসা অনেকটাই বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষ বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে অবহেলিত গ্রামীণ জোনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।

প্রকাশনাঃ বদলে যাওয়া দৃশ্যপট

শেখ রাসেল পদক ২০২৪

 

জরুরি হটলাইন

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিযাত্রা

স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১

মুজিব১০০ আ্যাপ

নবস্পন্দন