কোস্টগার্ড নৌবহরে আরো দু’টি রণতরী সংযুক্ত করতে সরকার ইতালী থেকে এ বছরের আগস্টে জাহাজ কেনার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা রক্ষায় কোস্টগার্ডের শক্তি আরো বৃদ্ধির প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা রক্ষা এবং সমুদ্র পথে অবৈধ মৎস্য শিকার ও চোরাচালান, অস্ত্র ও মাদক পাচার এবং সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণেও কোস্টগার্ডের জনশক্তি ও সরঞ্জাম বাড়ানো প্রয়োজন।
সূত্র জানায়, সরকার ইতোমধ্যেই ইতালি থেকে দু’টি রণতরী কিনলেও এই বাহিনীর পক্ষে বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র সীমায় যথাযথ নজরদারি বজায় রাখার জন্য এগুলো যথেষ্ট নয়।
গতকাল কক্সবাজার থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ভাটিতে বঙ্গোপসাগরে সিজিএস তাজুদ্দিন জাহাজে বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংবাদদাতা সমিতির (ডিকাব) সদস্যদের সঙ্গে আলাপকালে কর্মকর্তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পরিধি বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে কোস্টগার্ডের শক্তি বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
তারা আরো জানান, সমুদ্রপথে জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির আশংকা থাকায় তা প্রতিরোধ এবং মৎস্য ও খনিজসম্পদের নিরাপত্তায়ও কোস্টগার্ডের বিরাট দায়িত্ব রয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ডের বিভিন্ন মহড়া দেখেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, সরকার অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান এবং অবৈধ মাছ ধরা বন্ধ করাসহ বিভিন্ন অবৈধ তৎপরতা বন্ধের মাধ্যমে দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষায় কোস্টগার্ডের শক্তি আরো বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কেবল সমুদ্রে নয়, কোস্টগার্ড দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন নদ-নদীতে জাটকা নিধন প্রতিরোধেও কাজ করছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়লেও বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট এবং ভারত ও মায়ানমার থেকে বঙ্গোপসাগরের বিশাল সমুদ্র এলাকা লাভ করার ফলে তা যথেষ্ট নয়।
তিনি আরো বলেন, অতীতে বিদেশী জাহাজ মাছ শিকারের জন্য প্রায়শই বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে ঢুকে পড়ত। এখন কোস্টগার্ডের নজরদারির কারণে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উপ-পরিচালক ইয়াহিয়া সৈয়দ বলেন, বিদেশ থেকে রণতরী কেনার পাশাপাশি কোস্টগার্ড জাহাজ, বড় আকারের টহল জাহাজ ও টাগাবোট নির্মাণ করছে খুলনা ও নারায়ণগঞ্জ শিপইয়ার্ডে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা শিগগিরই আমাদের সমুদ্র এলাকায় পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবো।’
পরে কোস্টগার্ড বঙ্গোপসাগরে তাদের কাজ ও মহড়া দেখায়। প্রতিমন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ এই মহড়া প্রত্যক্ষ করেন।